১৫ই আগস্ট এর ভাষণ pdf, ১৫ই আগস্ট এরর তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভার সভাপতির ভাষণ ,১৫ই আগস্ট এর বক্তৃতা pdf, Download PDF ১৫ই আগস্ট এর ভাষণ, ভাষণ লিখন ১৫ই আগস্ট এর নিয়ে,১৫ই আগস্ট এর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির একটি ভাষণ তৈরি কর,

 



জাতীয় শোক দিবসের ভাষণ/বক্তব্য

প্রশ্ন: তোমার কলেজে ‘১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে প্রধান অতিথির একটি মঞ্চ ভাষণ তৈরি কর।


আসসালামু আলাইকুম,

আমি সবার আগে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি এ অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের প্রতি- যাঁরা আমাকে এখানে প্রধান অতিথি হবার দুর্লভ সুযোগ করে দিয়েছেন।

(ads1)

আজকে আমরা এ মহতী অনুষ্ঠানে দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সমবেত হয়েছি জাতীয় শোক দিবস পালন করার জন্য। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে এক দল বিপথগামী সেনা সদস্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর পরিবার ও আত্মীয়-পরিজনসহ নির্মমভাবে হত্যা করে মানব ইতিহাসের জঘন্যতম অপরাধ ঘটিয়েছিল। সেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের দিনটিকেই জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং এই দিবসটি বাঙালী জাতি তাদের প্রাণপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধায় অভিভূত হয়, শোকাভিভূত হৃদয়ে শ্রদ্ধার অশ্রু নিবেদন করে।


সুধীবৃন্দ,

বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড বাঙালি জাতীর জন্য এক চরম কলঙ্কজনক অধ্যায়। আপনারা জানেন, শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে পশ্চিমা হানাদারদের বিরুদ্বে জীবনপণ সংগ্রাম করে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের সগৌরব উত্তরণ ঘটিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রমের যে আহব্বান জানানো হয়েছিল তাতে সাড়া দিয়ে বাঙালি স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বীর জাতি হিসেবে বাঙালি বিশ্বের বুকে অনন্য ইতিহাসের সৃষ্টি করেছে।


এর জন্য ত্রিশ লক্ষ বাঙালিকে আত্মহুতি দিতে হয়েছে। এই সংগ্রাম ও স্বাধীনতার পিছনে বঙ্গবন্ধুর সীমাহীন প্রেরণা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। অথচ ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! ক্ষমতা গ্রহণের কিছুদিন পড়েই কয়েকজন বিপথগামী সেনা সদস্যের উচ্চাকাঙ্খার জন্য তাঁকে সপরিবারে প্রাণ দিতে হলো। শোকসাগরে ভাসল সারা দেশবাসী। এতে সারা বিশ্ববাসী স্তম্ভিত হলো। স্বাধীন দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার যে উদ্যোগ তিনি গ্রহণ করেছিলেন তা এভাবেই মর্মান্তিক পরিণতি লাভ করে।

(ads2)


সুধীবৃন্দ,

আজকে শোক দিবস পালনের অর্থ বঙ্গবন্ধুর জন্য বেদনার অশ্রুপাত নয়। তিনি সোনার বাংলা গড়ে তোলার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা সফল করে তুলতে পারলে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো সার্থক হবে। দীর্ঘ দিন পড়ে হলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এবার জাতির শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে জাতিকে সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নেয়ার সাধনায় আত্মনিয়োগ করতে হবে।


বাঙালি জাতির স্বাধীনতা যেমন পরম গৌরবের, তেমনি স্বাধীনতার মর্যাদা বৃদ্বির জন্য আত্মত্যাগের সাধনাও পরম আকাঙ্কিত। শিক্ষার অভাব ও দারিদ্র্য জন-জীবনকে বিপর্যস্ত করেছিল। স্বাধীন দেশে সাম্প্রতিককালে শিক্ষায় যেমন অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, তেমনি খাদ্যেৎপাদনেও স্বয়ংম্পূর্ণতা এসেছে। স্বাধীন দেশের মর্যদা সমুন্নত করে তোলার জন্য বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে এগিয়ে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। তাঁর মহান আদর্শকে প্রতিটি বাঙালরি জীবন প্রতিফলিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিবেদিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে যদি সর্বশক্তি নিয়ে আত্মনিয়োগ করা যায় তাহলেই জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো সার্থক হবে।


সুধীবৃন্দ,

জাতীয় শোক দিবসকে শোক প্রকাশের দিন বলে বিবেচনা না করে অঙ্গীকারের দিন বলে বিবেচনা করতে হবে। সে অঙ্গীকার হবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার। আসুন আমরা সেই মহৎ উদ্দেশ্যে নিজেদের নিবেদিত করি।


বাংলাদেশ চিরজীবী হোক। খোদা হাফেজ।

0 Comments

আমাদের সাথে থাকুন

Advertisement 2

Advertisement 3

Advertisement 4