সামাজিক অবক্ষয় রােধে ইসলামি শিক্ষার গুরুত্ব বিশ্লেষণ শিখনফল।
শিখনফল/বিষয়বস্তু: ইসলামী শিক্ষার ধারণা, উদ্দেশ্য ও ইসলামী শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা।
নির্দেশনাঃ (সংকেত/ধাপ/পরিধি): নিচের বিষয়গুলাে বিবেচনায় রেখে লিখতে হবে-
- ইসলামি শিক্ষার ধারণা।
- ইসলামি শিক্ষার উদ্দেশ্য।
- ইসলামি শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তা।
- ইসলামি শিক্ষার অভাবে সামাজিক অবক্ষয়সমূহ চিহ্নিত করণ ও সামাজিক অবক্ষয়সমূহ থেকে উত্তরণের উপায়।
উত্তর সমূহ:
এসাইনমেন্ট সম্পর্কে যে কোন প্রশ্ন আপনার মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে লাইক পেজ : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com
(ক)
ইসলামি শিক্ষার ধারণা :
ইসলাম শিক্ষার আরবি প্রতিশব্দ হলো ইলম এর অর্থ হলো- জ্ঞান, জানা, অবগত হওয়া ইত্যাদি। ইসলামি পরিভাষায় কুরআন ও হাদিসভিত্তিক এমন জ্ঞান অন্বেষণ করা যার মাধ্যমে ইসলামি জীবনব্যবস্থার ওপর চলা সহজ হয়। ইলম দ্বারা বোঝায় মহান আল্লাহকে জানবার জ্ঞান এবং এ অর্থে দ্বীন বিষয়ক যেকোনো জনকে ইসলাম শিক্ষা বলা হয়।
ইসলাম শিক্ষার পরিচয় এভাবেও দেওয়া যায়, ইসলাম শিক্ষা এমন একটি বিষয় যার পঠন পাঠন, অধ্যয়ন, অনুশীলন করলে আল্লাহর দেওয়া বিধান পরিপূর্ণ জীবন বিধান-দীন ইসলামের স্বরূপ সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা যায় এবং তদনুযায়ী স্বীয় জীবন গঠন ও পরিচালনা করে আল্লাহ প্রদত্ত খেলাফতের দায়িত্ব -কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা যায়। এ জ্ঞান মানুষের মহামূল্যবান সম্পদ, যা মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠ অবদান। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা,
“আল্লাহ তায়ালা তোমার প্রতি কিতাব ও হিকমত অবতীর্ণ করেছেন আর তুমি যা জানতে না তা তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন। তোমার প্রতি আল্লাহর মহানুগ্রহ রয়েছে।” (সূরা নিসা : ১১৩)
সর্বোপরি, যে শিক্ষা মুসলিম দার্শনিক, মুসলিম বৈজ্ঞানিক, মুসলিম অর্থনীতিবিদ, মুসলিম ঐতিহাসিক সৃষ্টি করবে -তাই ইসলামি শিক্ষা নামে অবহিত হওয়ার যোগ্য।
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন দর্শন ও পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। মাবন জীবনের সমগ্র দিক ও বিভাগের জন্য এর নিজস্ব মূলনীতি ও বিধান রয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রেও ইসলামের দিক নির্দেশনা রয়েছে। ইসলামী শিক্ষা বলতে বুঝায়- “যে শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামকে একটি পরিপূর্ণ জীবনাদর্শ হিসেবে শিক্ষা দেয়ার বন্দোবস্ত থাকে। তাই ইসলাম শিক্ষা।”
এ শিক্ষা লাভ করার ফলে শিক্ষার্থীদের মন-মগজ-চরিত্র এমনভাবে গড়ে ওঠে, যাতে ইসলামের আদর্শে জীবনের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার যোগ্যতা অর্জিত হয়। এক কথায়- “ইসলাম সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞান লাভ করার শিক্ষাই হল ইসলামী শিক্ষা।” শিক্ষাই জীবনের আলো। জ্ঞান মানুষের মহামূল্যবান সম্পদ- যা মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠ অবদান।
এ মহামূল্যবান জ্ঞানের কল্যাণেই মানবজাতি ফেরেশতা তথা সমগ্র সৃষ্টি জগতের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে সমাসীন। আর এ কারণেই মানুষ মহান আল্লাহর প্রতিনিধি হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। ইসলামের শিক্ষা ব্যবস্থা এক স্বতন্ত্র বৈশেষ্ট্যের দাবীদার।
(খ)
ইসলামি শিক্ষার উদ্দেশ্য :
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
ইসলাম শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো- ইসলামকে সঠিকভাবে জানার ও মানার মাধ্যমে আল্লাহর খাঁটি গোলাম হিসেবে ব্যক্তি তৈরি করা এবং তার সন্তুষ্টি অর্জন করা। ফলে ইসলাম শিক্ষা মানুষের শারীরিক, মানসিক, নৈতিক ও আত্মিক বিকাশ সাধন করে মানুষকে সত্যিকারের মানুষে রূপান্তরিত করে। ইসলাম শিক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তি ও সমাজজীবনে মৌলিক পরিবর্তন সাধন সম্ভব হয়। এর কল্যাণে ব্যক্তি আদর্শ ও চরিত্রবান হয়, সুনাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সমাজ-রাষ্ট্র তথা বিশ্বের সম্পদে পরিণত হয়।
মানবতার বিকাশ সাধন:
শিক্ষার প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য হলো মনুষ্যত্ব ও মানবিক গুণাবলীর বিকাশ সাধন করা। মানব প্রকৃতির মননশীলতা, সৃজনশীলতা ও কর্মকুশলতা শিক্ষার মাধ্যমেই বিকাশ লাভ করে।
কুরআন-হাদীসের জ্ঞান আহরণের মাধ্যমেই মনুষ্যত্বের প্রকৃত বিকাশ, আত্মার উন্নতি, আধ্যাত্মিক জগতের রহস্যাবলী, আল্লাহ ও সৃষ্টি-জগত সম্পর্কিত জ্ঞান অবগত হওয়া যায়। মানুষের মধ্যে স্নেহ-মমতা, দয়া, সাহস, দূরদর্শিতা, নেতৃত্ব ইত্যাদি মানবিক গুণাবলীও জ্ঞানার্জনের মাধ্যমেই উৎকর্ষ লাভ করে ও বিকশিত হয়। এ শিক্ষার গুণেই মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে সৃষ্টিজগতের উপরে। কুরআনের ভাষায়:
“নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তানকে সম্মান দান করেছি।” (সূরা বনী ইসরাইল : ৭০)
স্রষ্টা ও সৃষ্টির পরিচয়ের জন্য শিক্ষা:
মহান স্রষ্টা আল্লাহর আনুগত্য ও বন্দেগী সম্পর্কে অবগত হওয়াও শিক্ষার উদ্দেশ্য। কেননা, আল্লাহ বলেন,
“আমি জিন ও মানব জাতিকে আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি।” (যারিয়াত : ৫৬)
আল্লাহর আনুগত্য ও বন্দেগী করতে হলে প্রথমে আল্লাহর সঠিক পরিচয়, আনুগত্য ও বন্দেগীর ধরন এবং আদায় করার নিয়ম নীতি অবগত হওয়া একান্ত অপরিহার্য। আর শিক্ষা ব্যতীত এগুলো অবগত হওয়া যায় না। প্রকৃত জ্ঞানীরা আল্লাহর এ শিক্ষার গুণেই মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে সৃষ্টিজগতের উপরে। কুরআনের ভাষায়,
“নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তানকে সম্মান দান করেছি।” (সূরা বনী ইসরাইল : ৭০)
স্রষ্টা ও সৃষ্টির পরিচয়ের জন্য শিক্ষা :
মহান স্রষ্টা আল্লাহর আনুগত্য ও বন্দেগী সম্পর্কে অবগত হওয়াও শিক্ষার উদ্দেশ্য। কেননা, আল্লাহ বলেন
“আমি জিন ও মানব জাতিকে আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি।” (যারিয়াত : ৫৬)
আল্লাহর আনুগত্য ও বন্দেগী করতে হলে প্রথমে আল্লাহর সঠিক পরিচয়, আনুগত্য ও বন্দেগীর ধরন এবং আদায় করার নিয়ম নীতি অবগত হওয়া একান্ত অপরিহার্য। আর শিক্ষা ব্যতীত এগুলো অবগত হওয়া যায় না। প্রকৃত জ্ঞানীরা আল্লাহর স্বরূপ বুঝে তাঁর ইবাদাত করতে পারে। কুরআনে বলা হয়েছে,
“নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাহগণের মধ্যে কেবল বিদ্বানগণই আল্লাহকে ভয় করে।” (সূরা ফাতির: ২৮)
সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস পোষণ মানুষের সকল কাজের চালিকা শক্তি। আর তা অর্জিত হয় ইসলামী শিক্ষার মাধ্যমে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
ইসলামী সংস্কৃতির সাথে পরিচয় লাভ :
ইসলামী শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলামী শিক্ষা-সংস্কৃতির সাথে পরিচয়। অপসংস্কৃতি সম্পর্কে সম্যক ধারা। ইসলামের রয়েছে মানবতার ঊষালগ্ন থেকে চলে আসা সভ্যতা ও ঐতিহ্যের গৌরবময় উত্তরাধিকার। ইসলামের শিা, সাহিত্য ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের অফুরন্ত ভাণ্ডারের সাথে পরিচয়ের জন্যে ইসলামী শিক্ষা খুবই জরুরী বিষয়।
শান্তিময় সুন্দর জীবনের জন্যে :
মানুষের জীবনকে সুন্দর ও শান্তিময় করার জন্য ইসলামী শিক্ষা অপরিহার্য। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, জাতি ও আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে সহায়তা করে ইসলামী শিক্ষা। মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর খলীফা। পৃথিবীতে মানুষের রয়েছে অনেক দায়িত্ব। এ দায়িত্বের প্রতি যত্নবান ও সচেতন করে তোলা ইসলামী শিক্ষার উদ্দেশ্য।
আল্লাহর দ্বীনকে সঞ্জীবিত রাখা :
সমাজ জীবনে আল্লাহর দ্বীনকে সঞ্জীবিত করা ও প্রতিষ্ঠিত করার গুরুত্ব অপরিসীম। বিশ্বনবীর (স) তিরোধানের মাধ্যমেই নবুয়াতের পরিসমাপ্তি ঘটেছে। তাঁর পরে আর কোন নবীর আগমন ঘটবেনা। নবীর উম্মাহর উপর দ্বীনের হিফাযত ও প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব বর্তিয়েছে। কাজেই আল্লাহর দ্বীন শিক্ষা করে একে সঞ্জীবিত রাখা ও প্রতিষ্ঠা করা “মুসলিম উম্মাহর" প্রধান কর্তব্য। এজন্য মুসলিম উম্মাহর ওলামায়ে কিরামকে নবীদের উত্তরসুরী বলা হয়েছে। মহানবী (স) ঘোষণা করেছেন :
“যে ব্যক্তি ইসলামকে সঞ্জীবিত করার উদ্দেশ্যে জ্ঞান শিক্ষা করতে করতে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, জান্নাতের মধ্যে নবীগণ ও তার মধ্যে মাত্র একধাপ ব্যবধান থাকবে।”
আত্মকর্মসংস্থান :
হালাল উপার্জনে উৎসাহিত করা ও আত্মকর্মসংস্থানে সক্ষম করে গড়ে তোলা ইসলামী শিক্ষার অন্যতম বড় উদ্দেশ্য। আল্লাহ তাআলা যেমন বান্দাহকে সালাত, সাওম ও অন্যান্য ইবাদত করার আদেশ দিয়েছেন। তেমনি তিনি জীবিকা উপার্জনেরও নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেন
“সালাত সমাপন করে তোমরা পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহরাজি সন্ধান কর।” (সূরা জুমুআ : ১০)
মহানবী (স) জীবিকা উপার্জনকে ফরষ বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন :
“হালাল জীবিকা উপার্জন ফরযের পরেও একটি ফরয।” (বায়হাকী)
রাসূলুল্লাহ (স) আত্মকর্মসংস্থানের প্রতি খুবই তাকিদ দিয়েছেন। তিনি আরও ঘোষণা করেছেন :
“তোমরা ফজরের সালাত আদায় করার পর তোমাদের জীবিকার সন্ধান না করে ঘুমিয়ে যেওনা।”
(গ)
সত্য-মিথ্যার প্রভেদ এর জন্য শিক্ষা:
সত্য-মিথ্যার দ্বন্দ্বই পৃথিবীর ইতিহাস। ইসলাম সত্য এবং কুফর মিথ্যা। এ সত্য-মিথ্যা, ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় ও সুন্দর-অসুন্দর এর পার্থক্য নির্ণয় করতে ইসলামী জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। ইসলামী জ্ঞান ছাড়া তা সম্ভব নয়। আল্লাহ বলেন-
তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে এক আলোময় বস্তু এসেছে। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে চায় এর দ্বারা তাদের তিনি শান্তি পথে চালিত করেন। আর নিজের ইচ্ছায় তাদের আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। আর তাদের চালিত করেন সরল পথে। (সূরা মায়েদা ৫:১৫-১৬)
মহান স্রষ্টা কে চেনা ও জানার জন্য ইসলামী শিক্ষার অপরিহার্য। আল্লাহকে চিনতে হলে, তাকে সঠিকভাবে মানতে হলে তার সত্তা ও গুণাবলী জানতে হবে। তার যথার্থ পরিচয় জানা না থাকলে তার ইবাদত ও আনুগত্য করা যায় না। যারা সত্যিকারের জ্ঞানী তারাই সম্যকভাবে আল্লাহ কে চিনেন, জানেন রহস্যময় বিষয়সমূহ। এজন্য তারা গৌরব অহংকার করেন না বরং এক আল্লাহর নিয়ামত মনে করেন এবং বলেন-
এসব কিছুই আল্লাহর দান। এব্যাপারে আমাদের কোন কৃতিত্ব নেই। (সূরা আলে ইমরান-৩৭)
প্রকৃত জ্ঞানী ব্যক্তিগণ চিন্তা-চেতনায় এমন পবিত্রতা লাভ করেন যে তারা আল্লাহর পক্ষ হতে প্রদত্ত প্রতিদান কে দুনিয়ার সবকিছু হতে উত্তম মনে করে। আল কুরআন এর ভাষায়-
আল্লাহ, ফেরেশতা এবং জ্ঞানী ব্যক্তিগণ ন্যায়ের সাথে সাক্ষ্য দেন যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। (সূরা আলে ইমরান- ১৮)
বস্তুত প্রকৃত জ্ঞানী মানুষেরা আল্লাহ ও আল্লাহর সৃষ্টিকে সম্যকভাবে বুঝতে পারে।
আল কুরআনে বলা হচ্ছে-
আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যারা জ্ঞানী, তারাই তাকে ভয় করে। (সূরা ফাতির ২৮)
হালাল উপার্জনের জন্য শিক্ষা:
হালাল উপার্জন করা ফরজ। আর হালাল উপার্জনের জন্য এবং আত্ম-কর্মসংস্থানের উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষা প্রয়োজন। কোনটি হালাল ও হারাম তা জানার জন্য ইসলামী শিক্ষা অপরিহার্য। সমাজ থেকে অন্যায়, অবিচার, বিশৃঙ্খলা ও অশান্তির দাবানল নির্বাপিত করার জন্য প্রয়োজন ধর্মের অনুশীলন। আর ইসলামই একমাত্র শান্তির ধর্ম। সমাজ থেকে অন্যায়-অবিচার দূর করার জন্য ইসলাম সম্বন্ধে জানা খুবই প্রয়োজন।
মানবিকতার বিকাশ:
শিক্ষার মাধ্যমেই মানুষের মানবিক বৃত্তিগুলোর বিকাশ সাধন হয়। মানুষের মেধা, মনন ও রুচি শিক্ষার মাধ্যমে উৎকর্ষ লাভ করে। শিক্ষার দ্বারা মানুষের মধ্যে দয়া-মায়া, স্নেহ-মমতা, সহানুভূতি ও সহমর্মিতা ইত্যাদি মানবিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটে। কাজেই ইসলামী শিক্ষা একান্ত প্রয়োজন।
ইসলামী শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের চরিত্র পুতপবিত্র হয়। মানুষের আচার-আচরণ পরিশীলিত ও পরিমার্জিত হয়। এতে চারিত্রিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। ইসলামী শিক্ষা একজন মানুষকে রাষ্ট্রের, সমাজের ও পরিবারের সদস্য হিসেবে গড়ে তোলার শিক্ষা দেয়। তার মধ্যে সুনাগরিকতার গুণাবলী সৃষ্টি হয়; কর্তব্যনিষ্ঠ ও দায়িত্বশীল বানায়। মানুষ দেহসর্বস্ব জীব নয়, তার রয়েছে আধ্যাত্বিক জীবন। আত্মিক উন্নতি ও আধ্যাত্মিক বিকাশ ইসলামী শিক্ষা ছাড়া সম্ভব নয়। আর আধ্যাত্মিক প্রশান্তি ও উন্নতি মানবতার পরম প্রাপ্তি। এজন্যও ইসলামী শিক্ষার প্রয়োজন।
দ্বীনের উজ্জীবনের জন্য:
দ্বীনের প্রচার, প্রসার এবং প্রতিষ্ঠা ও তা সমুন্নত রাখার অক্ষুন্ন ও উন্নয়নের জন্য ইসলামী শিক্ষা একান্ত প্রয়োজন। ইসলামী শিক্ষা ছাড়া দ্বীনের উজ্জীবন সম্ভব নয়। শিক্ষা মানবিকতার বিকাশ ঘটায়, সত্যিকারের জ্ঞানচক্ষু খুলে দেয়, নিজেকে চিনতে পারে; চিনতে পারে মহান স্রষ্টা আল্লাহকে। সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায় এবং সর্বোপরি তাঁর দায়িত্ব-কর্তব্য বুঝতে পারে শিক্ষার মাধ্যমেই। কাজেই শিক্ষা অর্জন করাকে ইসলাম তার অনুসারীদের উপর অপরিহার্য করে দিয়েছে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল কপিরাইট: (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
(ঘ)
নৈতিক মূল্যবোধ, প্রজ্ঞা ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মানবতাবোধ, ভ্রাতৃত্ববোধ, ভালোবাসা ও সহযোগিতার আদর্শ স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎসারিত হলে হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ ও সংকীর্ণতা কমে আসবে এবং যুদ্ধের সম্ভাবনা হ্রাস পাবে। মানুষ মানুষকে ভালোবাসবে, মানুষের কল্যাণে মানুষ কাজ করবে। এভাবে সমাজ-রাষ্ট্রে শান্তির সমীরণ প্রবাহিত হবে।
- সকল অবস্থায় আল্লাহর গোলামি করাঃ
একজন সংযমী লোক দেশ ও জাতির জন্য বড় সম্পদ। আর এ সংযমী হতে হলে তাকে আল্লাহর ইবাদতের দিকে অগ্রসর হতে হবে। ইসলামের প্রতিটি ইবাদত মানব মনে মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টিতে বিরাট ভূমিকা পালন করে। কাজেই নৈতিক অবক্ষয় রোধ করতে হলে মানব সমাজকে আল্লাহর গোলামির দিকে আনতে হবে। মানুষ যদি শাশ্বত এ জীবনব্যবস্থার দিকে ধাবিত হয় তাহলে সমাজ থেকে অন্যায়-অনাচার, পাপাচার, জুলুম, নির্যাতনসহ অকল্যাণকর সকল কাজ-কর্ম চিরতরে দূর হয়ে যাবে এবং সমাজ হবে শান্তির নীড়।
- ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলাঃ
সমাজ ও সভ্যতার নৈতিক অবক্ষয় রোধের অন্যতম উপাদান হচ্ছে ধর্মীয় অনুশাসন তথা ইসলামের পূর্ণাঙ্গ জীবন-বিধান মেনে চলা। কেননা এটা যে কোন সমাজ ও সভ্যতার ভিত্তি এবং রাষ্ট্রীয় সুদৃঢ় অবকাঠামো বিনির্মাণের অন্যতম সোপান।
- সর্বাবস্থায় তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করাঃ
নৈতিক অবক্ষয় থেকে সমাজের মানুষকে বাঁচাবার জন্য আমাদেরকে সর্বাবস্থায় তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করতে হবে এবং তাকওয়া সম্পন্ন মানুষ তৈরি করতে হবে। এভাবে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় থেকে রক্ষা করা সম্ভব।
- চরিত্রের সংশোধনঃ
একজন সচ্চরিত্রবান লোক কোনদিন অনৈতিক কাজ করতে পারে না। আর এ জন্যই সমাজ থেকে অনৈতিক কর্মকান্ড দূর করতে হলে মানুষকে নৈতিক চরিত্রের গুণে গুণান্বিত হতে হবে। তাহলেই নৈতিক অবক্ষয় রোধ করে একটি সুন্দর সমাজ গঠন করা সম্ভব।
- আখিরাতকে অগ্রাধিকার দেওয়াঃ
যদি কোন মানুষ আখিরাতকে অগ্রাধিকার দেয় তার পক্ষে কোন অনৈতিক কাজ করা সম্ভব নয়। এজন্য আখিরাতের প্রত্যাশী মানুষ তৈরি করার মাধ্যমে সমাজ থেকে অনৈতিক কাজ দূর হবে এবং নৈতিকতা প্রতিষ্ঠিত হবে। এভাবেই সমাজ থেকে সকল প্রকার অনৈতিক-অসভ্য কাজ-কর্ম দূরীভূত হতে পারে।
- রাসূল (সা) এর আদর্শ গ্রহণ করাঃ
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) মু’মিনদের চারিত্রিক উৎকর্ষতার জন্য কিছু বিষয় অর্জন এবং কিছু বিষয় বর্জনের শিক্ষা দিয়ে আদর্শ চরিত্রবান হওয়ার প্রেরণা যুগিয়েছেন। নৈতিক দিক থেকে উন্নত করার মানসে অর্জনীয় গুণাবলীর মধ্যে রয়েছে- তাকওয়া বা খোদাভীতি, শোকর, সবর, আত্মসংযম, ক্ষমা, উদারতা, সত্যবাদিতা, বদান্যতা, নম্রতা, প্রজ্ঞা, সততা, মিতব্যয়িতা, আমানতদারিতা, অতিথিপরায়ণতা, ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা প্রভৃতি। সমাজের মানুষদেরকে এসকল গ্রহণীয় বিষয়গুলো শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে নৈতিক অবক্ষয় থেকে জাতিকে বাঁচানো সম্ভব।
- ইসলামি শিক্ষাঃ
ইসলামি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ হলো নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধের অপরিহার্য উপাদান। কেননা এর মাধ্যমে মূল্যবোধভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে জ্ঞান ও অভিজ্ঞানকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সুচারুরূপে সংরক্ষণ নিশ্চিত করা যায়। ইসলামি শিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ব্যাপক বিশ্লেষণ, নিরন্তর গবেষণাভিত্তিক এবং জ্ঞান-অভিজ্ঞানের ভিত্তিতে হলে এর মাধ্যমে ব্যক্তির উন্নয়ন এবং নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল কপিরাইট: (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
এসাইনমেন্ট সম্পর্কে যে কোন প্রশ্ন আপনার মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে লাইক পেজ : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com
- ২০২১ সালের SSC পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২১ সালের HSC পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২১ সালের ৯ম/১০ শ্রেণি ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২১ সালের HSC (বিএম-ভোকে- ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স) ১১শ ও ১২শ শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২২ সালের ১০ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ২০২২ সালের ১১ম -১২ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
- ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
- ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
- ৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
- ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
এখানে সকল প্রকাশ শিক্ষা বিষয় তথ্য ও সাজেশন পেতে আমাদের সাথে থাকুন ।