বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের আবেগ অনুভূতি অনুধাবন এবং তাদের প্রতি পরিবার ও সমাজের ভূমিকা নির্ধারণ

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের আবেগ অনুভূতি অনুধাবন এবং তাদের প্রতি পরিবার ও সমাজের ভূমিকা নির্ধারণ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের আবেগ অনুভূতি অনুধাবন এ
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated

  

সুভা’ গল্প অনুসরণে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। মানুষের আবেগঅনুভূতি অনুধাবন এবং তাদের প্রতি পরিবার ও সমাজের ভূমিকা নির্ধারণ;

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের আবেগ অনুভূতি অনুধাবন এবং তাদের প্রতি পরিবার ও সমাজের ভূমিকা নির্ধারণ

তোমাদের জন্য মাদ্রাসার দশম শ্রেণির বাংলা পাঠ্য বইয়ের সুভা গল্প থেকে প্রদত্ত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের আবেগ অনুভূতি অনুধাবন এবং তাদের প্রতি পরিবারের ও সমাজের ভূমিকা নির্ধারণ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত আলোচনা করা হলো।

বাকপ্রতিবন্ধী সুভা তার পরিবার ও সমাজ থেকে যে আচরণ পেয়েছে তার বিবরণ-

আমাদের দেশে প্রতিবন্ধীরা কোনো-না-কোনোভাবে পরিবারের অবহেলার শিকার। তবে কোন পরিবারে বেশি, কোন পরিবারে কম। অবহেলার কারণে প্রতিবন্ধীতাকে অভিশাপ মেনে নিয়ে তারা অবহেলিত, বঞ্চিত জীবন যাপনে বাধ্য হয়। অনেক সময় তাদের অনাহারে-অর্ধাহারে থেকে দিন পার করতে হয়। অধিকাংশ পরিবারেই প্রতিবন্ধীদের বোঝা হিসেবে গণ্য করা হয়।

সুভা একজন বাকপ্রতিবন্ধী ছিল। বাকপ্রতিবন্ধী এই মেয়েকে নিজের মা পরিবারের বোঝা মনে করতেন। তার মা তাকে নিজের একটি ত্রুটি স্বরূপ দেখতেন। কন্যার এই অসম্পূর্ণতা লজ্জার কারণ বলে মনে করতেন। তার মা তাকে নিজের গর্ভের কলঙ্ক মনে করতেন এবং তার প্রতি বিরক্ত হতেন। পক্ষান্তরে, সুভার বাবা, বাণীকন্ঠ সুভাকে তার অন্য মেয়েদের অপেক্ষা একটু বেশি ভালোবাসতেন।

সুভা বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় তার কোন বন্ধু-বান্ধব ছিলনা। তার সাথে কেউ মিশতো না, কথা বলতে চাইতো না। সুভার গ্রামের লোকজন তাকে নিন্দা করতে শুরু করেছে।

সুভার প্রতি পরিবার ও সমাজের প্রত্যাশিত ইতিবাচক আচরণ-

প্রতিবন্ধীরা আমাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ তাদেরকে অবহেলায় পিছনে ফেলে রেখে সমাজ এগিয়ে যাবে তা কখনোই সম্ভব নয়। সমাজের অংশ হিসেবে তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। এ দায়িত্ব গুলো সঠিকভাবে পালন করলে প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয় বরং সম্পদে পরিণত হবে।

সুভা বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় প্রথমত তার পরিবারকে তার পাশে দাঁড়াতে হত। তার মনোবল বৃদ্ধির জন্য তার মায়ের মানসিকতার পরিবর্তন আনা উচিত ছিল। তিনি সুভার যত্ন নিতে পারতেন, ভালোবেসে আগলে রাখতে পারতেন। এছাড়াও সুভার সমাজের অন্যান্য মানুষ সুভার প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে পারতেন। তারা তাদের সন্তানদের উদ্বুদ্ধ করতে পারতেন সুভাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহন করার জন্য।

আমার চেনা/জানা একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের বেড়ে ওঠার প্রতিবন্ধকতা সমূহ-

আমাদের আশেপাশে এরকম অনেক শিশু দেখা যায় যারা স্বাভাবিক শিশুদের মত হয়না। তাদের আচার-আচরণ ও দৈহিক গঠন স্বাভাবিকের তুলনায় ধীর এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ, সমস্যাগ্রস্ত। এদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা ভালোভাবে চোখে দেখতে পায় না। কারও কারও হাঁটাচলা করতে অসুবিধা।

কিছু শিশু আছে যারা ঠিক মত কথা বলতে পারে না। আবার অনেকেই আছে যারা অন্যের কথা শুনতে পায়না। আবার কেউ কেউ আছে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যারা অনেক বড় হয়েও ছোটদের মতো আচরণ করে। আমার চেনা একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু রয়েছে। সে একা একা তার দিনাতিপাত করে।

বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় কেউ তার সাথে মিশে না, খেলে না। এমনকি কেউ তার সাথে কথাও বলতে চায় না।

  • প্রথমত, এদের প্রতিবন্ধকতার প্রধান কারণ হলো পরিবার। যেকোনো মানুষের সামাজিক অবস্থান তৈরি হয় পরিবার থেকেই। কিন্তু এই পরিবারই অনেক সময় প্রতিকূলতার সৃষ্টি করে।
  • সমাজে বিকশিত হওয়ার দ্বিতীয় প্রতিবন্ধকতা হলো সমাজ। কারণ সামাজিক ধ্যান ধারণার উপর নির্ভর করে এইসব শিশুদের ভবিষ্যৎ৷ আর সমাজই যদি তাদের স্বাভাবিকভাবে গ্রহন না করে, তাহলে এ ধরনের মানুষের জীবনে আরো বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসবে।
  • সমবয়সীরা আরেকটা প্রতিবন্ধকতা ৷ দেখা যায়, সমবয়সীরা তাদের সাথে মিশতে চায় না ৷ এটিই তাদের বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে সবচে বড় প্রতিবন্ধকতা।
  • বৈষম্য ও কুসংস্কার হলো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সমাজে বিকশিত হবার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। সমাজের সর্বস্তরে এরূপ একটি বিশ্বাস আছে যে, প্রতিবন্ধীত্ব একটি অভিশাপ এবং এটি পাপ কাজের শাস্তি। এরূপ বিশ্বাস বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সমাজে বিকশিত হতে বাধা সৃষ্টি করে।

একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষেরও সংবেদনশীল ও অনুভূতিপ্রবণ মন আছে।’ – মন্তব্যটি সুভা ও আমার চেনা/জানা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ করা হলো-

সুভা বাকপ্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও সে চাইতো তার কিছু বন্ধুবান্ধব থাকুক। যাদের সাথে সে ইশারায় গল্প করবে, মনের ভাব প্রকাশ করবে। সে চায় তার মা তাকে বোঝা না ভাবুক। ভালোবেসে যেনো তাকে কাছে টেনে নেয়। কিন্তু যখন তার ভাগ্যে এসব জুটলো না, তখন সখ্যতা গড়ে উঠলো প্রকৃতির সাথে৷ প্রকৃতি যেনো তার সকল অভাব পূরণ করে দিতো, যেনো তার সাথে কথা বলতো।

নদীর কলধ্বনি, লোকের কোলাহল, মাঝির গান, পাখির ডাক, তরুর মর্মর-সমস্ত মিশে চারদিকের চলাফেরা-আন্দোলন-কম্পনের সাথে এক হয়ে সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় সুভার চিরনিস্তব্ধ হৃদয় উপকূলের কাছে এসে ভেঙ্গে পড়তো। তার বন্ধুত্ব ছিল প্রাণীদের সাথে। গোয়ালের দুটি গাভী, তাদের নাম সর্বশী ও পাঙ্গুলি।

মানুষের সাথে তার ভাবের বিনিময় না হলেও, ভাষাহীন প্রাণী আর প্রকৃতির সাথে ঠিকই হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে সুভা।

তাই বলা যায়, একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষেরও সংবেদনশীল ও অনুভূতিপ্রবণ মন আছে- মন্তব্যটি সুভা ও আমার চেনা/জানা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের পরিপ্রেক্ষিতে যথার্থ।

 

এইচএসসি /ভোকেশনাল/আলিম সকল সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর পেতে ক্লিক করুন

শেয়ার করুন:

إرسال تعليق

আমাদের সাথে থাকুন
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!