Class 7 Subject: bangladesh and global studies Assignment Answer, 2nd Week Assignment Answer 2021

Class 7 Subject: bangladesh and global studies Assignment Answer, 2nd Week Assignment Answer 2021
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated

 

Class 7 Subject: bangladesh and global studies Assignment  Answer, 2nd Week Assignment Answer 2021


ভাষা আন্দোলনের ঘটনাবলী ধারাবাহিকভাবে লেখ।

উত্তর:আজ এসেছি ভাষা আন্দোলনের ঘটনাবলি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন সম্পর্কিত আলোচনা নিয়ে। আজকের আলোচনা থেকে তোমরা ভাষা আন্দোলনের ঘটনাবলি ধারাবাহিকভাবে লিখতে পারবে।

    • ভাষা আন্দোলনের ঘটনাবলি ধারাবাহিকভাবে লেখা হলো-

    বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন।

    মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে তদানীন্তন পাকিস্তান অধিরাজ্যের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

    ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও, বস্তুত এর বীজ রোপিত হয়েছিল বহু আগে; অন্যদিকে, এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ভাষা আন্দোলনের ঘটনাবলি

    ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়।

    পাকিস্তানের ছিল দুইটি অংশ: পূর্ব বাংলা, পশ্চিম বাংলা।

    পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য বিরাজমান ছিল।

    ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান অধিরাজ্য সরকার ঘোষণা করে যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।

    [ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

     

    এ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।

    কার্যত পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না।

    ফলস্বরূপ বাংলাভাষার সম-মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে।

    ভাষা আন্দোলনের ঘটনাবলি

    আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

    ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।

    ক্রমবর্ধমান গণআন্দোলনের মুখে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়।

    • আমাদের বিদ্যালয়ের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যেভাবে পালন করা হয়েছিল তার একটি পর্যায় ক্রমিক বর্ণনা দেয়া হলো-

    ‘মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষে ‘ক’ উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।

    বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নির্দেশনায় বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়।

    প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানমালার সূচনা হয় সকাল ৭ ঘটিকায় প্রভাতফেরির মাধ্যমে।

     

    খুব ভোর থেকেই বিদ্যালয়ের আশপাশের ছাত্রছাত্রীরা খালি পায়ে বিদ্যালয়ের সামনের মাঠে সমবেত হয়।

    তাদের সঙ্গে যোগদান করেন শিক্ষকরাও।

    বিদ্যালয় মাঠের পূর্ব প্রান্তে শহীদ মিনারে ফুলের তোড়া প্রদানের জন্য প্রধান শিক্ষক মহোদয়ের নেতৃত্বে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের খালি পায়ে শোভাযাত্রা শুরু হয়।

    সে সময় সবার কণ্ঠে অনুরণিত হয় একুশে ফেব্রুয়ারির অমর গান : ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি?’

    [ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

    ধীর পদক্ষেপে অগ্রসরমান শোভাযাত্রাটি এক ভাবগম্ভীর পরিবেশ সৃষ্টি করে।

    শহীদ মিনারের পাদদেশে মিছিল উপনীত হলে প্রধান শিক্ষক মহোদয় প্রথমে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

    এরপর শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ফুলের তোড়া শহীদ মিনারে অর্পণ করে।

    ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর শহীদ মিনারের সামনের সবুজ ঘাসের গালিচার ওপর আবৃত্তি ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

    প্রথমে বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত কবিদের কবিতা থেকে নির্বাচিত কবিতাবলি আবৃত্তি করে শিক্ষার্থীরা।

    পরে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন শিক্ষকরা।

    আবৃত্তি শেষে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিল্পীরা।

    দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

    প্রধান শিক্ষকের সভাপতিত্বে বিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক ও দুজন শিক্ষার্থী ‘মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’-এর ওপর আলোচনা করে।

    [ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

    সব শেষে ছিল পুরস্কার বিতরণী পর্ব।

    আবৃত্তি ও আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে প্রধান শিক্ষক মহোদয় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

    ভাবগম্ভীর পরিবেশে উদ্যাপিত মহান একুশের অনুষ্ঠানমালায় শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে অংশগ্রহণ করে।

    মহান ভাষা আন্দোলনের চেতনা যে বাঙালি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল, তা বর্তমান প্রজন্মের কাছে প্রেরণার উৎস হিসেবে ধরা দেয় এ অনুষ্ঠানে।

    তোমাদের বিদ্যালয়ে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কীভাবে পালন করা হয়েছিল তার একটি পর্যায়ক্রমিক বর্ণনা দাও

    উত্তর:

    একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির চির প্রেরণা ও অবিস্মরণীয়  একটি দিন। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, এখন এটি সারা বিশ্বের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।

    জাতির জীবনে শোকাবহ, গৌরবোজ্জ্বল, অহংকারে মহিমান্বিত চিরভাস্বর এই দিনটি। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ।

    [ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

    সেদিন মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত ও সফিউররা। পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষার জন্য রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে দেয়ার প্রথম নজির এটি। সেদিন তাদের রক্তের বিনিময়ে শৃঙ্খলযুক্ত হয়েছিল দুঃখিনী বর্ণমালা ও মায়ের ভাষা। আর এর মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে সংগ্রামের সূচনা হয়েছিল তা মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে।

    একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙালির কাছে চির প্রেরণার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। একুশের প্রথম প্রহর থেকেই জাতি কৃতজ্ঞ চিত্তে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে। হৃদয়ের সবটুকু আবেগ ঢেলে দিয়ে সবার কণ্ঠে বাজে একুশের অমর শোকসঙ্গীত –
    ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি 
    আমি কি ভুলিতে পারি ………………….।

    একুশে ফেব্রুয়ারি ভাঙালি জাতিসত্তার শেকড়ের অনুপ্রেরণর দিন। এই দিনটি ঐতিহ্যের পরিচয়কে দৃঢ় করেছে। বাংলা ভাষার রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে সম্মানের আসন লাভ করেছে। এ ভাষার কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অমর কাব্যগন্থ্য ‘গীতাঞ্জলী’ রচনা করে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ১৯১৩ সালে। এ ভাষার অসাধারণ প্রজ্ঞাবান মানুষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে জাতিসংঙ্গের সাধারণ পরিষদে বাংলা ভাষায় বক্তৃতা দিয়ে বাংলাকে নিয়ে গেছেন বিশ্ব পরিমণ্ডলে।

    ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃত এবং ২০১০ সালে জাতিসঙ্গের সাধারণ পরিষদ ‘এখন’ থেকে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস হিসাবে পালিত হবে’ প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। আর এভাবেই বাংলা ভাষার বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া চলমান।
     
    ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয় ১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেমের প্রতিষ্ঠিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক  সংগঠন তমদ্দুন মজলিশের হাত ধরে। ১৫ সেপ্টেম্বর তমদ্দুন মজলিশ একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে যার শিরোনাম ছিল ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা বাংলা-না উর্দু ?’ এই  পুস্তিকার লেখক কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল মনসুর আহমেদ এবং অধ্যাপক আবুল কাশেম বাংলা ভাষাকে ভাববিনিময়, অফিস আদালতের ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা  করার পক্ষে জোরালো দাবি তুলে ধরেন।

    ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদে উর্দু ও ইংরেজিকে সরকারি ভাষা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। গণপরিষদে পূর্ব বাংলার প্রতিনিধি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা হিসেবে উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাকে গণপরিষদের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করার প্রস্তাব করেন। পাকিস্তান গণপরিষদে তার প্রস্তাব আগ্রাহ্য হলে পূর্ব বাংলায় শুরু হয় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ।

    এর পরম্পরায় ২৭ ফেব্রুয়ারি এক সভায় গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ।  সভায় বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দাবিতে ১১ মার্চ বৃহস্পতিবার সারা দেশে হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত  নেয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত  ১১ মার্চ তারিখটি রাষ্ট্রভাষা দিবসরূপে পালিত হয়।

    ২১ মার্চ ১৯৪৮ সালে রেসকোর্স ময়দানে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ এক নাগরিক সংবর্ধনায় ঘোষণা করেন যে ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’ সমাবেশস্থলে উপস্থিত ছাত্রনেতারা ও জনতা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করে।

    ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে অনুষ্ঠিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ‘Students Role in nation building’ শিরোনামে একটি ভাষণ প্রদানকালে ক্যাটাগেরিক্যালি বাংলা  ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবিকে নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে একটি এবং  সেটি উর্দু, একমাত্র উর্দুই  পাকিস্তানের মুসলিম পরিচয় তুলে ধরে।’

    জিন্নাহর এই বক্তব্য সমাবর্তনস্থলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং ছাত্ররা দাড়িয়ে ‘‘নো নো’’ বলে প্রতিবাদ করে। জিন্নাহর এই বাংলাবিরোধী স্পষ্ট অবস্থানের ফলে পূর্বে পাকিস্তানের ভাষা আন্দোলন আরো বেশি গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে।

    ভাষা আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা হয় ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি খাজা নাজিমুদ্দীনের ভাষণের মাধ্যমে। এদিন পল্টন ময়দানের এক জনসভায় জিন্নাহর কথাই পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু’।

    নাজিমুদ্দীনের বক্তৃতার প্রতিবাদে সভা এবং ৩০ জানুয়ারি ঢাকায় ছাত্র ধর্মঘট পালন করে। সেদিন ছাত্র-নেত্রীরা আমতলায় সমবেত হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট ও প্রতিবাদ সভা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী হরতাল পালনের সিদ্দান্ত নেয়। পরে তারা মিছিল নিয়ে বর্ধমান হাউসের দিকে অগ্রসর হয়।

    পরদিন ৩১ জানুয়ারি ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার লাইব্রেরি হলে অনুষ্ঠিত সভায় মাওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে কাজী গোলাম মাহবুবকে আহ্বায়ক করে ৪০ সদস্যের ‘সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মী পরিষদ গঠিত হয়’। এই পরিষদ তার সভায় ২১ ফেব্রুয়ারি  হরতালের, সমাবেশ ও মিছিলের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে।

    ২০ ফেরুয়ারি সরকার স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকায় এক মাসের জন্য সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বিভিন্ন হলে সভা করে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয়।

    ২১ ফেব্রুয়ারি  পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী  সকাল ৯টা থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসে জড়ো হয়। তারা ১৪৪ ধারা জারির বিপক্ষে স্লোগান দিতে থাকে এবং পূর্ববঙ্গ আইন পরিষদের সদস্যদের বাংলা ভাষা সম্পর্কে সাধারণ জনগণের মতামতকে বিবেচনা করার আহ্বান জানাতে থাকে। বেলা ২টার দিকে আবদুল মতিন এবং গাজীউল হকসহ অন্যান্য নেতারা দাবি আদায়ে অনড়  থাকে।

    ছাত্ররা ছোট ছোট দলে মিছিল নিয়ে ‘রাষ্টভাষা বাংলা চাই’ স্লোগান দিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে এলে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্য করে। এমনকি ছাত্রীরাও এ আক্রমণ থেকে রেহাই পায়নি। ছাত্রছাত্রীরা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। পুলিশ বিক্ষুদ্ধ ছাত্রদের সামলাতে ব্যর্থ হয়ে গণপরিষদ ভবনের দিকে অগ্রসরমাণ মিছিলের ওপর পুলিশ গুলি চালায়।

    [ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

    গুলিতে আব্দুল জব্বার  রফিক উদ্দিন আহমেদ ও আবুল বরকত নিহত হয়। বহু আহতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । ছাত্র হত্যার সংবাদ দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে জনগণ তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে।  উপায়ন্তর না দেখে ২২ ফেব্রুয়ারি  নুরুল আমিন সরকার  তড়িঘড়ি করে আইন পরিষদ বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব আনেন এবং  প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে পাস হয়।

    ১৯৫৪ সালের ৭ মে  যুক্তফ্রন্ট সরকারের উদ্যোগে পাকিস্তানের সরকার বাংলাকে একটি রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকার করে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে। ১৬ ফেব্রুয়ারি  ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের গণপরিষদ বাংলাকে  রাষ্ট্রভাষা  হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে তা সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রস্তাব উত্থাপন করার জন্য প্রস্তাব উত্থাপিত হয়।

    ১৯৫৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান জাতীয়  সংসদ বাংলা এবং  উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধান পাস করে। ওই বছরের ৩ মার্চ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানকারী পাকিস্তানের সংবিধান কার্যকর হয় এবং  ১৯৪৭ সালে তমদ্দুন মজলিশের মাধ্যমে মায়ের ভাষায় কথা বলার যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তার সাফল্য অর্জিত হয়।

    ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি উদযাপন করা শুরু হয় ১৯৫৩ সাল থেকে। এদিন প্রত্যুষে সর্বস্তরের মানুষ খালি পায়ে প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণ করে এবং  শহীদ মিনারে গিয়ে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও পুষ্পার্ঘ্য  অর্পণ করে। সারা দিন মানুষ শোকের চিহ্নস্বরূপ কালো ব্যাজ ধারণ করে। এছাড়া আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে।  

    বাংলা আজ শুধু বাংলাদেশের ভাষা নয়, এটি বিশ্বের কাছে এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস সৃষ্টিকারী পরিচিত ভাষা। আর এই পরিচয় দেয়ার প্রথম অবদানটুকু হলো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। ১৯১৩ সালে তার অমর কাব্য গীতাঞ্জলি তাকে এনে দেয় ‘নোবেল পুরস্কার’ আর এর মাধ্যমে বিশ্ববাসী জানতে পারে বাংলা ভাষার কথা, শুরু হয় বাংলা ভাষার বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া।

    ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলা ভাষাকে সত্যিকার অর্থে বিশ্বায়নের পূর্ণরূপ  দেয়ার জন্য জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তার এই  উদ্যোগের প্রথম বাস্তবায়ন হয় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। জাতিসংঘে কার্যক্রম পরিচালিত হয় পাঁচটি ভাষায়। সব দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী তথা জাতিসংঙ্গের নিযুক্ত  প্রতিনিধিরা উক্ত পাঁচটি ভাষার যেকোনো একটি ভাষায় ভাষণ দেন। একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের ২৩ মার্চ  জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে বাংলায় ভাষণদান করার ফলে বিশ্ববাসী জানতে পারে বাংলা ভাষার মহত্ব।

    ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে টঘঊঝঈঙ কর্তৃক বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি বিশ্বদরবারে এনে দিয়েছে এক বিশাল খ্যাতি। ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে বিশ্বজুড়ে অমর একুশের উদযাপন নিঃসন্দেহে এক বিশাল জাতীয় গৌরব ও সম্মানের। ২০০০ সাল থেকে UNESCO এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো এ দিবসটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করে।
     
    ২০০১ সালের ১৫ মার্চ বিশ্বের সব মাতৃভাষার গবেষণা, উন্নয়ন ও সংরক্ষণে কাজ করার  উদ্যোগে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ঢাকার সেগুনবাগিচায়। বর্তমানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ভাষাসংক্রান্ত  গবেষণা,ভাষা সংরক্ষণ ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি এটি ভাষার ক্ষেত্র আন্তর্জাতিক সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছে যা বাংলা ভাষাকে বিশ্বমর্যাদায় আসীন করতে ভূমিকা রাখছে।  

    [ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

    ২০১০ সালের ৩ নভেম্বর জাতিসংঘের ৬৫তম সাধারণ অধিবেশনে ৪র্থ কমিটিতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রস্তাবটি উত্থাপন করে এবং প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। ফলে এটি বাঙালি জাতি, বাংলা ভাষার প্রতি বিশ্ববাসীর অকুণ্ঠ সমর্থন এবং সম্মান প্রদর্শনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত  সৃষ্টি করে। বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিক চর্চা  বিশ্বজুড়ে বেড়ে চলেছে। মাতৃভাষার সংখ্যার বিচারে বাংলা ভাষা পৃথিবীর একটি শক্তিশালী ভাষা। 

    রাষ্ট্রীয় পর্যায় বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী দেশের সংখ্যা মূলত একটি-বাংলাদেশ। সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। এর বাইরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা প্রদেশ, আসাম প্রদেশের বরাক উপত্যকার অন্যতম প্রশাসনিক ভাষা বাংলা, ফলে ভারতের ক্ষেত্রে বাংলা একটি প্রদেশিক ভাষা। ভারত উপমহাদেশের বাইরে 
    একমাত্র আফ্রিকার সিয়েরালিওনে বাংলা ভাষাকে সরকারি ভাষার মর্যাদা দেয়া  হয়েছে। সম্প্রতি ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার সংসদ বাংলাকে স্বীকৃতির বিল পাস করে। ফলে বাংলা ভাষা লাভ করে এক অনন্য মর্যাদা।

    এই মুহূর্তে বহির্বিশ্বে ৩০টি দেশের ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু রয়েছে বাংলা বিভাগ, সেখানে প্রতি বছর হাজার হাজার অবাঙালি পড়ুয়া বাংলাভাষা শিক্ষা ও গবেষণার কাজ করছে। এছাড়া চীনা ভাষায় রবীন্দ্র  রচনাবলির ৩৩ খণ্ডের অনুবাদ এবং লালনের গান ও দর্শন ইংরেজি ও জাপানি ভাষায় অনুবাদ হয়েছে।

    বাংলা ভাষা, সাহিত্য, ইতিহাস ও সংস্কৃতি নিয়ে বহির্বিশ্বে ভারত ও বাংলাদেশের পর ব্রিটেন ও আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি চর্চা হয়ে থাকে। এর বাইরে চীন, জাপান, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাংলা ভাষার সংস্কৃতি চর্চা হচ্ছে। আমেরিকায় কমপক্ষে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় ও এশীয় গবেষণা কেন্দ্রে বাংলা ভাষার চর্চা হচ্ছে। এর মধ্যে নিউইর্য়ক,শিকাগো,ফ্লোরিডা, ক্যালিফোর্নিয়া, ভার্জিনিয়া উল্লেখযোগ্য।

    বিশ্বের ছয়টি দেশের রাষ্ট্রীয় বেতারে বাংলা ভাষার আলাদা চ্যানেল রয়েছে। আরও ১০টি দেশের রেডিওতে বাংলা ভাষার আলাদা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হচ্ছে। ব্রিটেনে ছয়টি ও আমেরিকায় ১০টি বাংলাদেশি মালিকানাধীন ও বাংলা ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে। বিট্রেনে ১২টি  বাংলা সাপ্তাহিক প্রত্রিকা বের হয়। ‘বেতার বাংলা’ নামে সেখানে একটি বাংলা রেডিও স্টেশন রয়েছে।

    ইউরোপের ইতালিতে বর্তমানে পাঁচটি  বাংলা দৈনিক পত্রিকা এবং রোম ও ভেনিশ শহর থেকে তিনটি রেডিও স্টেশন পরিচালিত হচ্ছে। ইতালি থেকে ছয়টি অনলাইন টেলিভিশন এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে শতাধিক ফেসবুক টেলিভিশন চালু  রয়েছে। এছাড়া ডেনমার্ক সুইডেনসহ ইউরোপের আটটি  দেশ এবং মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশ থেকে বাংলা ভাষার মূদ্রিত ও অনলাইন পত্রিকা প্রকাশিত হয়।

    [ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

    একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপিত হয় সারা পৃথিবীতে একুশে আমাদের মননের বাতিঘর হিসেবে। একুশ এখন সারা বিশ্বের ভাষা ও অধিকারজনিত সংগ্রাম ও মর্যাদার প্রতীক। সারা বিশ্বের বিভিন্ন  দেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের অহংকার ‘শহীদ মিনার’।

    কিছু ঘটনা চেতনার আলো ছড়ায় সারা বিশ্বে। সে চেতনার দৃপ্ত শপথজুড়ে আছে আমাদের ভাইয়েরা, আমাদের ভাষা শহীদরা। সঙ্গে আছে সেই ঢাকা মেডিকেল প্রাঙ্গণ, সেই রক্তের ইতিহাস।

    মাতৃভাষার সুরক্ষা, বিকাশ এবং অনুশীলন ছাড়া কোনো জাতি অগ্রসর হতে পারে না, বাঙালি জাতি তো নয়ই। আর এভাবেই বাংলা ভাষা দিনে দিনে হয়ে উঠছে বিশ্বায়নের অন্যতম মাধ্যম।


إرسال تعليق

আমাদের সাথে থাকুন
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!