Ads Area

বৈদেশিক বাণিজ্য ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব কি ব্যাখ্যা করবে

বৈদেশিক বাণিজ্য ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব কি ব্যাখ্যা করবে


বৈদেশিক বাণিজ্য ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব কি ব্যাখ্যা করবে।


উত্তরঃ


ভূমিকা : দুই বা ততােধিক দেশের মধ্যে যে বাণিজ্য সংঘটিত হয়, তাকে বৈদেশিক বাণিজ্য বলে। পৃথিবীর কোনাে দেশেই সকল দ্রব্য উৎপাদন করতে পারে না। এর কারণ বিভিন্ন; যেমন- ভৌগােলিক অবস্থান, জলবায়ু, বৃষ্টিপাত, প্রাকৃতিক সম্পদের পার্থক্য প্রভৃতি। তাই স্ব-স্ব জাতির প্রয়ােজন মেটতে এক দেশকে অন্য দেশের সাথে বাণিজ্যে লিপ্ত হতে হয়।


উৎপাদন ব্যয় হ্রাস : বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলে একটি দেশ সে সকল পণ্যসামগ্রী উৎপাদন করে থাকে, যে সকল পণ্যে উৎপাদন

খরচ কম পড়ে। সুতরাং বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস ঘটে।

মােট উৎপাদন বৃদ্ধি : বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলে দুটি দেশই বিশেষ পণ্য উৎপাদনে দক্ষতা লাভ করতে পারে। ফলে একএকটি দেশে এক এক শ্রেণীর উৎপাদন ঘটানাে সম্ভব হয়।

বৈদেশিক বাণিজ্যের গুরুত্ব : টমাস মুন বলেন, “সম্পদ ও ধনরত্ন বাড়ানাের উপায় হলাে বৈদেশিক বাণিজ্য। বর্তমানে বৈদেশিক বাণিজ্যের গুরুত্ব ও প্রয়ােজনীয়তা অধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ কতকগুলাে সুবিধার কারণে, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বা বৈদেশিক বাণিজ্যের গুরুত্ব ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিচে বৈদেশিক বাণিজ্যের গুরুত্ব আলােচনা করা হলো


অনুৎপাদনশীল দ্রব্যের আমদানি : কোনাে দেশই প্রয়ােজনীয় সকল দ্রব্য উৎপাদন করতে পারে না। বৈদেশিক বাণিজ্যের দ্বারা এ

সকল দ্রব্য আমদানি করা যায়।

কর্মসংস্থান : বৈদেশিক বাণিজ্য দ্বারা উদ্বৃত্ত দ্রব্য রপ্তানি করা যায়। রপ্তানির জন্য দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটে। ফলে দেশে শিল্পোন্নয়ন ঘটে এবং দেশের জনগণের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়।


অবাধ প্রতিযােগিতা : বৈদেশিক বাণিজ্যের মধ্যে প্রতিযােগিতা বিদ্যমান থাকে। ফলে নতুন নতুন উৎপাদন কৌশল আবিষ্কার হয়। এতে একেচেটিয়া বাজারের সম্বাবনা কমে যায়।


প্রাকৃতিক দুর্যোগের মােকাবিলা : বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বিদেশ হতে পণ্য আমদানি করে জরুরি অবস্থার মােকাবিলা করা সম্ভব হয়।


প্রযুক্তি জ্ঞানের বিকাশ : বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলে উন্নত দেশসমূহ হতে কারিগরি ও প্রযুক্তি জ্ঞান আমদানি করা সম্ভব হয়। এর | ফলে দেশে শিল্প ও প্রযুক্তি জ্ঞানের বিকাশ ঘটে।


সম্পদের ব্যবহার : বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমে দেশে সম্পদের গতিশীলতা বাড়ে এবং সম্পদ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ সম্ভব হয়। তাছাড়া রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য উৎপাদন বাড়াতে হলে সম্পদের সদ্ব্যবহার একান্ত প্রয়ােজন।


কৃষি ও শিল্পের প্রসার : বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলে একটি কৃষিপ্রধান দেশ শিল্পের প্রয়ােজনীয় সামগ্রী আমদানি করতে পারে।

আবার একটি শিল্পপ্রধান দেশ বিদেশ হতে প্রয়ােজনীয় কাঁচামাল আমদানি করতে পারে। এর ফলে উভয় দেশে কৃষি ও শিল্পের। ভােগের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

পণ্যমূল্য হ্রাস ; রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য প্রচুর পরিমাণে পণ্য উৎপাদন করতে হয়। তাই দ্রব্যের একক ব্যয় কম হয়। যার ফলে দ্রব্যমূল্য হ্রাস পায়। এতে ফলে ভােগকারীর স্বল্প মূল্যে তাদের ভােগ্যপণ্য ক্রয় করতে পারে।


বিদেশে বাজার সম্প্রসারণ : বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমে উৎপাদনকারী তাদের পণ্যের বাজার বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারণ করতে | পারে। এর ফলে বিদেশে দেশীয় পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং দেশের উৎপাদন ও রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন : এর ফলে বিদেশ হতে উন্নত যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি করে উৎপাদন পদ্ধতির উন্নয়ন করা যায় । | উৎপাদন কৌশল আয়ত্ত করে অধিক উৎপাদন করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে পারে।


উপসংহার : বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলে প্রতিটি দেশ পরস্পরের খুব কাছাকাছি আসতে সক্ষম হয় এবং তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর ফলে বিশ্বে সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়, জ্ঞান ও বিজ্ঞানের উন্নয়ন ঘটে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বৈদেশিক বাণিজ্যের গুরুত্ব অপরিসীম।


Assignment

إرسال تعليق

0 تعليقات

Ads Area