প্রেমের হালচাল !! পরকীয়া প্রেম



এর বাইরে প্রেমের নতুন মাত্রা হলো পরকীয়া প্রেম।

 এটা বিবাহিত ছেলে-মেয়েরাই বেশী করে থাকে। বর্তমান সমাজে এ প্রেমের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর এ জন্য মূলত দায়ী সমাজ ব্যবস্থা। কারণ ছেলে বা মেয়ে একজনকে পছন্দ করে কিন্তু বাবা-মা জোর করে অন্য জনের সাথে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন। 

আবার স্বামী বা স্ত্রী এক জন আরেক জন থেকে দীর্ঘদিন দূরে থাকার কারণেও পরকীয়া সম্পর্ক হচ্ছে যেমন স্বামী বিদেশে থাকে বা চাকরি সূত্রে দূরে থাকে। তখন মাঝখানে অন্য একজনের আবির্ভাব কারো কারো বেলা হয়ে থাকে। পূর্বে একাধিক ছেলে বা মেয়ের সঙ্গ পেয়ে অভ্যস্ত ফলে মানসিকভাবেই সে স্বামী বা স্ত্রী ব্যতিত অন্য কারো সঙ্গ পেতে বা সম্পর্কে জড়াতে চাইবে। কেউ কেউ কৌতুহলী মানসিকতার নিত্য নতুন মানুষের সংস্পর্শে আসতে ভালো লাগে। সেখান থেকেও এ সম্পর্ক কখনো কখনো হয়। 

অনেকে শারীরিকভাবে অক্ষম থাকার কারণেও কেউ কেউ পরকীয়া সম্পর্কে জড়ায়। সর্বোপরি যোগাযোগটা এখন সহজ। সেটা মোবাইল, ইন্টারনেট বা সবার মধ্যে প্রাইভেসির চাওয়ার কারণে আলাদা বসবাস করার কারণেও এসব সম্পর্কের সুযোগ বেশী তৈরি হয়েছে। এ সম্পর্ক করতে গিয়ে কেউ শান্তিপূর্ণভাবে জীবন যাপন করে তবে অনেক মর্মান্তিক পরিণতিও হয়। যেমন, পরকীয়া প্রেম করে বড় ভাইয়ের বউ নিয়ে ছোট ভাই উধাও, মালিকের বউ বাড়ির কাজের লোক বা ড্রাইভারের সাথে উধাও, স্বামী ছেড়ে অন্যের হাত ধরে চলে যাওয়া এসবই পরকীয়া সম্পর্কের কারণেই হয়।হয়তো সব যুগেই সমাজে এর উপস্থিতি ছিল।

 তবে মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে বা শতাংশ হিসেবে সেটা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হলে তা নিয়ে ভাববার অবকাশ আছে। কারণ পারিবারিক বন্ধনই আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য। আমরা নিশ্চয়ই সেটা হারাতে চাইবো না। তবে এক্ষেত্রে আমাদের সমাজ ব্যবস্থারও একটু দায় রয়েছে।

 সেটা হলো ইচ্ছার বিরুদ্ধে একসাথে থাকা বা সংসার করা। এজন্যও কখনো কখনো পরকীয়া সম্পর্ক হয় বা টিকে থাকে। সুতরাং সমাজটা যদি আর একটু ফ্লেক্সিবল হয় তাহলে সাহস করে অনেকেই ইচ্ছার বিরুদ্ধে একসাথে থাকতে বাধ্য হবে না। আগে দায় মুক্ত হবে।পরে নতুন সম্পর্কে জড়াবে। যদিও পরিসংখ্যান মতে এখন শহরে ডিভোর্সের সংখ্যা বেড়ে গেছে এবং অধিকাংশই মেয়েরা দিচ্ছে।

মোবাইলে প্রেম, পর্ণোগ্রাফি

একটি ফাইভ-সিক্সে পড়–য়া ছেলে-মেয়ের হাতেও আজকাল মোবাইল দিচ্ছেন বা দিতে বাধ্য হচ্ছেন বাবা-মায়েরা। তারা কানে হেডফোনে গান শুনছেন। গল্প করছেন। ভিডিও ক্লিপ দেখছে। আর প্রেম করছে। 

আগেই বলেছি যে, এখন ছেলেদের মেয়ে সান্নিধ্য পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়না। কোনো মতে কারো মাধ্যমে নাম্বারটা জোগাড় করতে পারলেই হলো। রাত-বিরাতে বেডরুমে ঢুকে যাওয়া যায়। একদিন, দুইদিন, তিনদিন পটাতে পটাতে ম্যানেজ হয়ে যায়। ব্যাস। শুরু হয় জীবনের বাকী সবকিছুর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কারণ ফোনে অনেকের কন্ঠ এবং আচরণ শুনতে ভালো শোনায়। আর ওই বয়সে বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে কথা বলার একটা আগ্রহও তৈরি হয়।
 তাছাড়া নিষিদ্ধ কিছুর প্রতি তো আগ্রহ মানুষের সহজাত। নিষিদ্ধ এজন্য বললাম যে স্কুল জীবনের প্রেম কোনো বাবা-মা ই মানেন না। মানা যায়না। কারণ ওটাতো তার নিজেকে গড়ার বয়স। ওসময় প্রেম শুরু করলে পড়াশোনার ক্ষতিই বেশী হয়। খুবই কম ছেলে-মেয়ে আছে যারা এক সঙ্গে দু’টো চালাতে পারে।

আর প্রযুক্তি, টিভি চ্যানেল, মোবাইল ফোন ইত্যাদির সাথে প্রেমের ধরন-গড়নও বদলে গেছে। এখন কথা হয় মোবাইল কোম্পানির দেয়া অফার পালসে পালসে। আর প্রেমও হয় পালস-এ পালস-এ। ছয় মাস না যেতেই ব্রেক আপ। আবার রিফ্রেশ-রিস্টার্ট ঠিক কম্পিউটার অন-অফ করার মতোই। আর ভাইরাস ধরলে সেটাও ক্লিন করে নেয়। তবে মেয়েদের একটু বেশী ঝামেলা হয়। কারণ মেয়েরা কাউকে মন দিয়ে উজার করেই দেয়। আর ছেলেরা বন্ধু-বান্ধবের পরামর্শে হোক বা জেনেটিক্যালি (বংশগত) কারণে হোক হাতে একটু রেখে দেয়। তবে আগেই বলেছি সবকিছুতেই সবাই এক নয়। তবে বেশীরভাগই এরকম।

এখন বহু ছেলে একাধিক সিম, একাধিক প্রেম করে, যা পূর্বেই বলেছি। বহু মেয়েও করে। তবে এর মধ্যে কোনটা যে প্রেম তা আমার ধারণা তারা নিজেরাও মাঝে মধ্যে খুঁজতে গিয়ে কনফিউজ হয়ে পড়ে। এভাবেই চলছে। আর প্রেম মানেই ছোঁয়া-ছুয়ি খেলা। সেটাও চলছে। চলবে। এক্ষেত্রে কেউ করে টাইম পাস, কেউ করে সহবাস, কারো ফাল্গুন মাস, কারো সাড়ে সর্বনাশ। এরা সবাই সিনেমাতেই দেখছে অক্ষয় কুমার ‘হেই বেবি’ সিনেমায় একসাথে চার-পাঁচটা মেয়ের সাথে প্রেম করছে, শারীরিক সম্পর্কও করছে। বাচ্চা কার আমার না অন্য কারো ইত্যাদি বিষয়ের মতো সিরিয়াস বিষয় নিয়ে ফান করছে। সবাই হাসছে। কখনো কখনো সিনেমাগুলো পুরস্কারও পাচ্ছে। অভিনেতা হিসেবে সমাজে তাদের অবস্থান আরো মজবুত হচ্ছে। সুতরাং আমি করলে দোষ কি। আগে মুখে মুখে শোন যেত, “কৃষ্ণায় করলে লীলাখেলা; আমরা করলে দোষ।” অবশেষে তো একটা হিন্দি সিনেমায় হিট গানই হলো- ‘ম্যা কারিতু শালা ক্যারেকটার ঢিলা হে’। সুতরাং আমারে আর ঠেকায় কে। যা খুশি তা করার লাইসেন্স তো পেলামই । ফলে এখন একাধিক প্রেম, শারীরিক সম্পর্ক গড়া মামুলি ব্যাপার এবং স্বাভাবিক বিষয়।

এখন কথা হলো ছেলে-মেয়ের প্রেম সব যুগেই ছিল। শারীরিক সম্পর্ক গড়াও ছিল। কিন্তু এখন মোবাইলে বা ভিডিও করার যে প্রবণতা মহামারির আকার ধারণ করেছে। 

তা অতীতে কোনোদিনই ছিলনা। ফলে একজনের দেখাদেখি অন্যজন প্রভাবিত হচ্ছে। আর সব বিবেচনায় সর্বনাশ হচ্ছে মেয়েটি এবং তার পরিবারের। এখন এটা একটা নতুন বিজনেস হয়ে গেছে। ফলে দিন দিন এসব গোপন বা প্রকাশ্য ভিডিও করার সংখ্যা বাড়ছেই।

ফলে এখন একটি মেয়ের কোনো ছেলেরা সাথে প্রেম করে শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হলে মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হবার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এজন্য মেয়েদেরকেই বেশী সচেতন হতে হবে। তাকে ছেলেটার চোখের ভাষা বোঝার চেষ্টা করতে হবে। অন্ধ প্রেম বলে কিছু নেই। মনে রাখতে হবে প্রেম কোনো নিঃস্বার্থ সম্পর্ক নয়। এখান দু-পক্ষের স্বার্থ জড়িত। 

প্রকৃত নিঃস্বার্থ সম্পর্ক হলো সত্যিকারের বন্ধুত্ব। কোনো ছেলে বা মেয়ের জীবনে যদি কপাল গুণে একজন ভালো বন্ধু জোটে তবে সেটাই রক্তের সম্পর্কের বাইরে সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পর্ক। এজন্য বলা হয় সব সম্পর্কের মধ্যেই একটা বন্ধুত্ব থাকা চাই। সেটা বাবা-মা, ভাই-বোন, প্রেমিক-প্রেমিকা, স্বামী-স্ত্রী সব ক্ষেত্রে। 

কারণ তাহলেই জীবনটা সুন্দর হবার সবগুলো দরজা খুলে যায়। এক্ষেত্রে বাবা-মার দায়িত্ব তার সন্তানের সাথে বন্ধুত্ব তৈরি করা। আর প্রেমিক-প্রেমিকা দুজনকেই এ দায়িত্ব সমানভাবে নিতে হবে। আর সাধারণ বন্ধুত্ব মানে বন্ধু-বান্ধব তো থাকবেই। বন্ধুত্বটা থাকলে দ্বন্দ্বটা কম হয়। একে অপরকে বুঝতে পারে ভালো। বন্ধনটা মজবুত থাকে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত থাকে, যা যে কোনো সম্পর্কে আবশ্যক।

আজকাল মোবাইলে রং নাম্বারে যতো অজানা ছেলেদের সাথে মেয়েরা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে, এর মধ্যে ৯৯ ভাগই প্রতারণায় ভরপুর। আর প্রতারিত হচ্ছে মেয়েরা। এরকম অনেক ঘটনা আছে। যে একজন মোবাইলে পটিয়ে ভুল ঠিকানা, ভূল নাম পরিচয় দিয়ে মেয়েটিকে এনে অন্য সব বন্ধুরা মিলে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। তারপর হয় মেরে ফেলেছে, নয় কোথাও মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে চলে গেছে।

আমি এরকম একটি সত্য ঘটনা বলি। মোবাইলে খাতির হবার পর মেয়েটিকে ডাকলে সে দেখা করতে আসে। তাকে নিয়ে যায় দূরের এক পরিচিত বন্ধুর বাড়িতে। 

জায়গাটি ঢাকার বাইরে কাছাকাছি কোনো জেলায়। সেখানে বাড়ির লোকের কাছে পরিচয় দেয় সে এটা তার বউ। বাড়ির মানুষও খুব আপ্যায়ন করে।তবে শুধু তার ছেলে বন্ধুটিকে আসল ঘটনাটা বলে। বন্ধু না গোপন রেখে একসাথে থাকার ব্যবস্থা করে দেয় তাদের বাড়িতে। রাতে যথারীতি একসাথে থাকা। পরে এখনতো মেয়েদের সেই চিরাচরিত কথা। বিয়ে করবে কবে। কারণ তারাতো মোবাইলে প্রেম করেছে। 

বিয়ে করবে এরকমও ছেলেটা বলেছে। এখন ছেলেটা আবার মেয়েটাকে ঢাকায় নিয়ে আসে। নিয়ে কি করবে। ভাবতে ভাবতে বুদ্ধি করে একটা হোটেলে তোলে। সেখানে উঠার পর তাকে রুমে রেখে বাইরে ফ্লেক্সিলোড করতে যাবার কথা বলে সে পালায়। সিম ভেঙ্গে ফেলে। সে যথারীতি লাপাত্তা হয়ে যায়। কারণ ছেলের কোনো ঠিকানা মেয়ে জানেনা। আর যার বাসায় নিয়ে যায় সেখানেও সে মুখ দেখাতে পারবেনা। 

কারণ সে তার বউ হিসেবে ওই বাড়িতে ছিল। এখন সেখানে তাকে খুঁজতে গেলে নিজেই অসম্মানিত হবে। ততোক্ষণে ছেলেটিও ওই বন্ধুকে বলে দিয়েছে যে এই মেয়ে আসলে যেন কোনোরকম পাত্তা না দেয়া হয়। কারণ ছেলেটিতো জানেই যে এ মেয়েটি তার বউ নয়। শুধু বাড়ির লোকদের বলা হয়েছে তার বৌ। এই হচ্ছে মোবাইলে প্রেমের নামে হাজারটা প্রতার

0 Comments

আমাদের সাথে থাকুন

Advertisement 2

Advertisement 3

Advertisement 4